ঘাড় কালো হওয়ায় পছন্দের ড্রেস বা পছন্দের হেয়ার স্টাইল করতে পারছেন না? আজকাল ঘাড় বা গলা কালো হয়ে যাওয়া বা ছোট ছোট কালো দাগ ছোপ পড়ে যাওয়া অনেকেরই সমস্যা। বিশেষ করে গরমের দিনে এই প্রবলেম টা বেশি দেখা যায় এর কারণ সূর্যের প্রকান্ড টাও তবে অনেকেরই আবার সারাবছরই ঘাড়ে কালো দাগ থাকে। ঘাড় বা গলার কালো দাগ কি আপনারও অস্বস্তির কারণ? তবে আজকের লেখা আপনার জন্য। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ঘাড় ও গলা কালো হওয়ার কারণ এবং কিভাবে ঘরে বসেই ঘাড় ও গলার কালো দাগ দূর করতে পারবেন। শুধুমাত্র প্রাকৃতিক উপায় ফলো করেই আপনি আপনার ঘাড় ও গলার কালো দাগ দূর করতে পারবেন,ভাবছেন কিভাবে? জানতে হলে আজকের লেখা টি শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।

ঘাড় কালো হওয়ার কারণ :
ঘাড় ও গলা বিভিন্ন কারণে কালো হয়ে যেতে পারে। তবে তার মধ্যে অন্যতম ২টি কারণ হলো ১. তীব্র রোদ ও ২. দূষণ বা ধুলাবালি। আমরা সারাদিনের বেশিরভাগ কাজই বাইরে করে থাকি তখন সূর্যের প্রচন্ড তাপে আমাদের ত্বক পুড়ে যেতে পারে। গরমের দিনে তাপ বেশি থাকে তাই ত্বক পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা টাও অনেক বেশি থাকে। এছাড়া চারিদিকের বিভিন্ন দূষণের ফলে আমাদের ত্বকে তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে তার কারণেও ত্বকে পুড়ে যাওয়ার মত কালো দাগ হতে পারে। আপনি একটু খেয়াল করলে দেখবেন আমদের গলা ও ঘাড়ের অংশটুকুই বেশিরভাগ সময় সূর্যের রোদের মধ্যে থাকে। সাধারণত এই ২টি কারণেই ঘাড় ও গলায় কালো দাগ দেখা দেয়। এছাড়াও অনেকেরই বিভিন্ন শারীরিক প্রবলেমের কারণেও ঘাড়ে বা গলায় কালো দাগ পড়তে পারে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
কালো দাগ দূর করার উপায় :
সামান্য কিছু টিপস ফলো করেই আপনি ঘরে ও গলার কালো দাগ দূর করতে পারবেন।ঘাড়ে বা গলার কালো দাগ দূর করার জন্য সবচেয়ে উপকারী ৩টি পদ্ধতি আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। পদ্ধতি ৩টির সবগুলো উপাদানই খুবই সহজলভ্য এবং আপনি খুবই সহজে ইউজ করতে পারবেন। তবে চলুন শুরু করি…
১. হলুদ ও লেবু :

২ চামচ হলুদ গুঁড়া নিন এবং এতে ১ চামচ লেবুর রস দিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিন। এরপর মিশ্রণ টি আপনার ঘাড়ে ও গলার কালো দাগের উপর অ্যাপ্লাই করুন এবং সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এরপর নরমাল পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন।
প্রাচীন কাল থেকেই হলুদ একটি অ্যান্টি সেপটিক উপাদান হিসেবে ইউজ করা হয়। হলুদের উপকারী উপাদান ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে এবং লেবু তে থাকা সাইটিক এসিড হলুদের সাথে মিশে ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
২. লেবু ও বেসন :
২ চামচ বেসনের মধ্যে লেবুর রস মিশিয়ে একটি থিক পেস্ট তৈরি করে নিন। এটি ঘাড়ে ও গলায় ইউজ করুন তারপর লেবুর খোসা দিয়ে সার্কুলার মোশানে রাব করুন ৫/১০ মিনিট এবং এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
লেবুতে থাকা সায়টিক এসিড ত্বকের জমে থাকা ময়লা দূর করে ত্বকের কালো দাগ কমিয়ে দেয়। এবং বেসনের উপাদান ত্বক ফর্সা করে তোলে। দ্রুত কালো দাগ কমাতে এই পদ্ধতি টি সপ্তাহে ২দিন ইউজ করুন।

৩. হলুদ ও আলু :
হলুদ গুঁড়া মধ্যে আলুর রস দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন এবং সেইটা কালো দাগের উপর অ্যাপ্লাই করুন। ১৫ মিনিট অপেক্ষা করার পর একটু ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
হলুদের উপকারিতা আলাদা করে বলার কিছু নেই কিন্তু আলুর উপকারিতা ও কিছু কম না। আলুর রস স্পেশালি ত্বক ফর্সা করার জন্য ইউজ করা হয়। আলুর রসে থাকে ভিটামিন সি যা ত্বকের যত্নে অনন্য উপকরণ।
বোনাস টিপস :
ঘাড়ের কালো দাগ দূর করতে হলুদ ও মধু দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এটি ঘাড়ে ও গলায় মেখে ১০/১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। মধু ত্বকের ডেড সেল অর্থাৎ মৃত কোষ দূর করে ত্বককে সতেজ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও হলুদের পুষ্টি উপাদান তো রয়েছেই।

দ্রুত গলা ও ঘাড়ের কালো দাগ দূর করতে উপরের পদ্ধতি গুলো নিয়মিত ইউজ করুন সপ্তাহে ২দিন যেকোনো একটি পদ্ধতি ইউজ করুন।
আরো কিছু দরকারি টিপস :
ঘাড়ের ও গলার কালো দাগ দূর করতে ঘাড় ও গলা নিয়মিত সাবান দিয়ে পরিষ্কার করুন। বাইরে যাওয়ার সময় বা রোদে যাওয়ার সময় অবশ্যই ঘাড় ও গলা ঢেকে যাবেন। প্রয়োজনে একটি সানস্ক্রিন ও ইউজ করতে পারেন। বাইরে থেকে ঘরে ফিরে ঘাড় ও গলা পানি দিয়ে পরিষ্কার করে একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ইউজ করে নিবেন। এতে আপনার ঘাড়ের কালো দাগ দ্রুত কমে যাবে। এছাড়াও পরিমাণ মতো পানি পান করা ও নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিতে হবে। তবেই ঘাড়ের কালো দাগ চিরতরে নির্মূল হয়ে যাবে।

সব সমস্যারই প্রাকৃতিক উপায়ে সমাধান রয়েছে। তাই গলা ও ঘাড়ের কালো দাগ দূর করতে উপরের টিপস গুলো আপনার জন্য অনেক হেল্পফুল হবে। আশা করছি উপরের সবগুলো টিপস ফলো করলে আপনার ঘাড় বা গলার কালো দাগের সমস্যা থাকবে না। কিন্তু যদি টিপস গুলো ফলো করার পরেও কালো দাগ থেকে যায় তাহলে হতে পারে আপনার শারীরিক কোনো প্রবলেমের জন্য কালো দাগ কমছে না। এক্ষেত্রে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণ করুন। আজকের লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য ধন্যবাদ।