হাতের কোমলতা ধরে রাখার সহজ টিপস জেনে নিন — hand care tips

0
40

হা ত আগের মতো সফট নেই ! গরমেও হাত রুক্ষ শুষ্ক হয়ে গেছে ! বা হাত নরম নয় ! এরকম প্রবলেম এর কথা অনেকেই জানিয়েছেন। তাই আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করতে এসেছি কিভাবে হাতের কোমলতা ধরে রাখতে পারবেন সেই নিয়ে। আমাদের অধিকাংশ কাজ কিন্তু হাতের জন্যই করা সম্ভব হয়। কিন্তু সেই হাত দুটোই যদি সুন্দর বা নরম না দেখায় তাহলে কি চলবে ? মোটেই না। সারাদিন বাইরের অনেক কাজের জন্য আমাদের হাত তার কোমলতা হারিয়ে ফেলে, এমনকি হাত নিজের নরম প্রকৃতি ও হারিয়ে ফেলতে পারে , অনেকের সাথেই এমনটা হয়েছে। আপনার হাতের কোমলতা কি সময়ের সাথে হারিয়ে যাচ্ছে ? তবে আজকের লেখা আপনার জন্য। কিভাবে হাতের কোমলতা ধরে রাখবেন জানতে লেখা টা শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।

হাতের কোমলতা হারানোর কারণ :

আপনার হাত বিভিন্ন কারণে তার কোমলতা হারাতে পারে। বাইরে অনেক সময় ভারী কাজ করা, বিভিন্ন ডিটারজেন্ট বা সার্ফ এর ইউজ করা, নিয়মিত হাতের পরিচর্চা না করা, ভুল ক্রিম ইউজ করা, হাতে অতিরিক্ত সাবান ইউজ করা, সুইমিং পুলের ক্লোরিন ইত্যাদি হাতের কোমলতা হারানোর অন্যতম কারণ। তাহলে কি হাত কে সুন্দর রাখতে গেলে আপনি এই কাজ গুলো করতে পড়বেন না? না তা নয়, আপনাকে এই কাজ গুলোর পাশাপাশি হাতের যত্ন নিতে হবে। একটা বাচ্চার হাত কতোটা সফট আর নরম হয় সেটা তো সবাই জানে কিন্তু সেই বাচ্চা তাই বড়ো হলে দেখা যায় আস্তে আস্তে তার হাতের কোমলতা হারাচ্ছে। এমনটা কেনো হয় জানেন কি? বড়ো হওয়ার সাথে সাথেই বাচ্চা টি বিভিন্ন ধরনের অ্যাকটিভিটির সাথে যুক্ত হয়। তবে আপনার হাত কিভাবে আবার সেই ছোট বাচ্চা টির মত করতে পড়বেন সেই নিয়েই আজ কথা বলবো।

হাতের যত্নে প্রাকৃতিক উপায় :

সবসময় যে একটা জিনিসের উপর আপনি সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করতে পারেন সেটি হলো প্রাকৃতিক উপায়। প্রকৃতি মায়ের এই অপরূপ ভান্ডার আমদের চিরকাল সাহায্য করেছে এবং এখন ও করে চলেছে। আমি নিজেও অনেক বেশি প্রাকৃতিক উপায়ের উপর বিশ্বাস করি। এবং এর একটি মাত্র কারণ হলো প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে কোনো সাইড এফেক্ট নেই। আপনি কোনো একটি প্রাকৃতিক উপাদান ইউজ করে আপনার মনের মত ফলাফল না পেলেও ওই উপাদানের ইউজের জন্য আপনার কোনো ক্ষতি হবে না এবং আপনি একদিকে ফলাফল না পেলেও অন্যদিকে অবশ্যই পাবেন। তাছাড়া প্রাকৃতিক উপাদান খুবই সহজলভ্য। সকলের হাতের কাছেই হাজার টা উপকারী উপাদান রয়েছে। আপনাকে কষ্ট করে শুধু সঠিক উপাদান টি খুঁজে বের করতে হবে।

সঠিক প্রাকৃতিক উপায় :

প্রাকৃতিক উপায় আমাদের সকলের জন্যই অনেক বেশি উপকারী। কিন্তু আপনি কি জানেন আসলে কোন উপাদান টা কোন কাজের জন্য বেশি উপকারী? আপনার প্রবলেম এর জন্য সঠিক উপাদান টি খুঁজে বের করার কাজটাই সবচেয়ে বেশি কঠিন। তবে চিন্তা নেই আমি আপনাদের জন্য এই কঠিন কাজ টি করে দেবো। প্রকৃতি তে থাকা অনেক উপাদানই আপনার হাতের যত্নে উপকারী। কিন্তু শুধু তো হাতের যত্ন নিলে হবে না উপাদান টা ইউজ করে আপনি আপনার হাতের কোমলতা ধরে রাখতে পারবেন কি না সেটাও জানা লাগবে। তবে চলুন আপনার হাতের কোমলতা ধরে রাখার জন্য সেই কার্যকরী উপাদান গুলো কি কি জেনে নেই।

১.লেবু :

হাত কে পরিষ্কার করার জন্য সাধারণ ভাবে আপনি লেবু ও চিনির মিশ্রণ ইউজ করতে পারেন। এটি ইউজ করা খুবই সহজ। একটি লেবু কে প্রথমে হাফ করে কেটে নিন এরপর লেবু তে চিনি মাখিয়ে হাতের উপর সারকুলার মোশানে রাব করুন। এতে আপনার হাতের জীবনু দুর হবে এবং রাব করার ফলে হাতের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে। আপনার হাত যদি শুষ্ক হওয়ার বলে হাতে রিংকেল পড়ে যায় তবে সেইটা হিল হবে। দিনে ২/৩ বার এই কাজ টা করুন।

২.মধু :

মধু তে রয়েছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। এটি আপনার হাতের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনবে। এবং এটির প্রতিদিন ব্যবহারে ত্বকের Ph এর ভারসাম্য বজায় রাখে। আরো বেশি ভালো হয় যদি আপনি মধুর সাথে সামান্য আপেল সাইডায়ার ভিনেগার মিশিয়ে ইউজ করেন তো। সারাদিনে একবার হলেও এটি ইউজ করুন।

৩.অ্যালোভেরা :

অ্যালোভেরার ৯০ শতাংশ অংশই পানি দিয়ে তৈরি হয়। আর আপনার হাতের কোমলতা ফেরাতে অ্যালোভেরা জেল তাই অনেক বেশি কার্যকরী হবে। আপনার হাতের আর্দ্রতা বজায় রাখতে অ্যালোভেরা জেল অঙ্ক উপকারী। আপনি একটি বিষয় খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন যে আপনার হাতের আর্দ্রতা যত বেশি থাকবে আপনার হাত ততই বেশি কোমল হয়ে উঠবে। অ্যালোভেরা জেল বা ন্যাচারাল অ্যালোভেরা ১০-১৫ মিনিট হাতে লাগিয়ে রাখুন এবং তারপর ভেজা তোয়ালে দিয়ে হাত মুছে নিন।

বোনাস টিপস:

আপনি যতটাই ব্যস্ত থাকুন না কেন চেষ্টা করবেন সারাদিনে ৩/৪ লিটার পানি পান করার। পানি আমাদের শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সব চেয়ে বেশি সাহায্য করে এবং এখন যেহেতু গরমের সময় পানির পাশাপাশি পানিযুক্ত ফল খেতে পারেন। যেমন তরমুজ, শসা, পেয়ারা, বাঙ্গি এইসব ফল একটু বেশি করে খাবেন। মনে রাখবেন আপনি যেমন খাবেন সেইটাই আপনার ত্বকে ফুটে উঠবে। আপনার হাত বেশি বার সাবান দিয়ে ধৌত করবেন না। কোনো মাইল্ড হান্ডওয়াশ ইউজ করতে পারেন এক্ষেত্রে। আপনার যদি গরমে রাশের প্রবলেম থাকে তবে অ্যালোভেরা জেল কিউব বা আইস কিউব ইউজ করতে পারেন। এভাবে ইউজ করলে হাতের আর্দ্রতা বৃদ্ধি পাবে এবং আপনার রাশ ও কমে যাবে।

কিছু হোম রেমেডি :

হাতের সঠিক যত্ন নিতে কিছু রেমেডি ও খুব কার্যকরী। আপনার রান্না ঘরের জিনিস দিয়েই খুব সহজেই রেমেডি গুলো তৈরি করে নিতে পারেন। আজ আপনাদের সাথে খুব কার্যকরী এবং খুব সহজেই তৈরি করতে পারবেন এমন ৩ টি রেমেডি শেয়ার করবো। অনেকেই আছেন রেমেডি তৈরি করে নিতে অসুবিধা মনে করেন তবে আজকের রেমেডি টা অনেক সহজ হবে। বিশেষ করে তাদের জন্য যারা অল্প সময়ের মধ্যে ভালো জিনিষ পেতে চান। তবে চলুন শুরু করি…

১. নিম ও হলুদ :

নিম ও হলুদ প্রাচীন কাল থেকেই অ্যান্টি সেফটিক হিসাবে কাজ করে আসছে। হাত কে পরিষ্কার করতে সাবান এর জায়গায় নিম ও হলুদ এর মিশ্রণ ইউজ করতে পারেন। এতেই আপনি বেশি উপকৃত হবেন। নিম ও হলুদ বেটে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এরপর সেটা হাতে লাগিয়ে ১০-১৫ রেখে দিন। গরমের জন্য এই পদ্ধতিটি অনেক উপকারী।

২. ময়দা ও দূধ :

পরিমাণ মতো ময়দা নিন এরপর এতে দুধ অ্যাড করে একটি গাঢ় পেস্ট তৈরি করে নিন। এরপর আপনার দুই হাতেই কনুই পর্যন্ত মাখিয়ে নিন। এটি আপনার হাতের ট্যান দুর করবে এবং হাত কে উজ্জ্বল করে তুলবে। উজ্জ্বলতা বাড়ানোর পাশাপাশি হাতের নমনীয়তা ও বৃদ্ধি করবে। গরমে বাইরে বের হলে ঘরে ফিরে অবশ্যই এই রেমেডি টি ইউজ করুন। এটি যেমন খুব সহজে তৈরি হয়ে যাবে ঠিক তেমনি কার্যকরী।

৩. আলু ও টমেটো :

আলুর রস বের করে নিন। এবং সেইটা আপনার হাতে মাখুন এরপর হাত টা একটু শুকিয়ে আসলে তার উপর টমেটো দিয়ে সার্কুলার মোশানে রাব করুন। এভাবে ৫-১০ মিনিট রাব করুন। এটি আপনার হাতের সব পোর গুলো এক্সপ্লয়িয়েট করতে সাহায্য করে। সপ্তাহে একদিন এভাবে নিজের হাতের পোর এক্সপ্লয়িয়েট করে নিন। হাতের পোর গুলোর ভিতরে অনেক ময়লা জমে থাকে। পোর এক্সপ্লয়িয়েট করার মানে হলো পোর গুলোর মুখ খুলে দেওয়া। এবং এভাবেই হাতের ময়লা সম্পূর্ণ রূপ বের হয়ে আসবে। এটি আপনার হাত কে কোমল করে তুলতে সব চেয়ে বেশি সাহায্য করে।

আশা করছি আজকের লেখাটিতে আপনাদের অনেক কিছু শেখাতে এবং বোঝাতে পেরেছি। হাতের কিভাবে যত্ন নিলে আপনার হাত হবে বাচ্চাদের মতো সফট ও নরম সেই সম্পর্কেও আপনাদের একটা ধারণা তৈরি হয়েছে। আমার বলা সব গুলো টিপস এবং রেমেডি এক এক করে সবগুলোই ফলো করুন। আশা করছি পোস্ট টি আপনাদের সাথে হেল্পফুল হবে। লেখা টি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!