শীত মানেই কিন্তু বিয়ের সিজন শুরু হয়ে যাওয়া আর সেই সাথেই ঘোরাঘুরি ও পিকনিক এর মজা।তবে একটা জিনিষ কিন্তু অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে যে শীত আসলেই আমদের নানারকম স্কিন এর সমস্যা দেখা দেয় আর আমরদের স্কিন মলিন ও প্রাণহীন হয়ে পড়ে। এতো আনন্দ,মজার মাঝে যদি স্কিন টা উজ্জল না দেখায় তাহলে কি ভালো লাগে বলুন তো?অবশ্যই লাগে না।তাই শীতে ঘরে বসেই কিভাবে ত্বকের উজ্জল্য বাড়িয়ে তুলবেন তার উপায় নিয়েই চলে এসেছি আমি আপনাদের কাছে।
শীতকালের শুষ্কতা:
শীতকালে আমাদের ত্বক অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে যায়।তার কারণ শীতের বাতাসে আর্দ্রতা কম।রুক্ষ শুষ্ক ত্বক শীতকালে প্রায় সবারই সমস্যা।ঠিক মতো যত্ন না করলে আমাদের ত্বক হয়ে যায় মলিন ফলে স্কিন টা একটু কালো কালো লাগে।কি করলে ত্বকের উজ্জল্য ফিরে আসবে আমরা সেই নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ি।তবে আর চিন্তার কোনো কারণ নেই।
ত্বকের যত্ন:
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে আপনারা অনেকেই হয়তো পার্লার এর দিকে ছুটেছেন কিন্তু পার্লার এর উজ্জ্বলতা বেশি দিন থাকে না।আর রোজ রোজ পার্লার এ যাওয়ার খরচ টাও অনেক। পার্লারে অনেক ধরনের কেমিক্যাল প্রোডাক্ট ইউজ করা হয় যাতে ত্বক ক্ষণিকের মাঝেই উজ্জ্বলতা ফিরে পাই।কিন্তু এইটা মোটেই ভালো নয়।পার্লার হয়তো অনেক ক্ষেত্রে সুবিধা জনক হলেও সব সময় নয়।
ঘরোয়া পদ্ধতি:
ঘরোয়া উপায় আমাদের ত্বক কে ভিতর থেকে উজ্জল করে তোলে।ঘরোয়া পদ্ধতিতে একই সাথে খরচ টাও কম এবং কোনো কেমিক্যাল ও নেই।আপনি খুব সহজেই ঘরে বসেই সেগুলো ব্যাবহার করতে পারবেন।তাই ঘরোয়া উপায় টাই মেনে চলা সঠিক।
১.টমেটো:
টমেটো তো এখন সব মৌসুমেই পাওয়া যায় আর টমেটোর গুনবলি ও কিন্তু কিছু কম নয়।আপনি টমেটো কে আপনার মুখে ইউজ করতে পারেন টমেটো তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম ও ভিটামিন C যা উজ্জ্বল ত্বক পেতে সাহায্য করে। টমেটোতে লাইসোপিন নামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ত্বকের বিভিন্ন দাগ, বলিরেখা এবং শুষ্কভাব দূর করে ত্বক মসৃণ করে।এবং টমেটো ব্যাবহারে আপনার স্কিন আগের চেয়ে অনেক সফট ও হয়ে উটবে।টমেটো কে হালকা হাতে নিজের স্কিন এর উপর ৫ মিনিট রাব করুন।এবং তারপর ধুয়ে ফেলুন।
২.শসা:
শসা তে রয়েছে ব্লিচিং প্রপার্টিজ যা ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করে ত্বক উজ্জ্বল এবং স্কিন টোন সমান করে।এটি ত্বকের ওপেন পোর কন্ট্রোল করতে বেশ উপকারী। মুখ ধোয়ার পর শুধু শশার রস টোনার হিসেবে মুখে লাগাতে পারেন। এটি আমাদের ত্বকের dullness দুর করবে।ত্বকের যত্নে শসার তুলনা অপরিসীম।শসা কে নিজের স্কিন কেয়ার রুটিন এর মধ্যে অবশ্যই add করুন।শসা বেটে শসার পেস্ট তৈরি করে নিন এবং ফেসে ইউজ করুন।
৩.আলু:
ত্বকের যত্ন নিবেন আলু কে বাদ দিয়ে এটাও কি সম্ভব?আলু তে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি। ত্বকের ব্রণ থেকে শুরু করে ব্ল্যাক হেডস পর্যন্ত সবকিছু দূর হবে এই আলু দিয়ে। ভিটামিন সি ত্বকের কোলাজেন বৃদ্ধি করে যা তাপ ও সূর্যের আলোর কারণে সৃষ্টি হওয়া কালো দাগ দূর করে দেয়। ভিটামিন বি ত্বকের কোষ ট্রান্সফরমেশন করে ত্বকের কালো দাগ এবং পিম্পলের দাগ দূর করে থাকে।এবং ত্বকের কালো দাগ ছোপ পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।ত্বকের ভিতরে লুকিয়ে থাকা উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে।এছাড়াও আলু আমাদের ত্বকের
৪.কলা:
কলা একটি বহুমুখী প্রতিভা সম্পন্ন ফল।কলার গুণাগুণ অনেক কলা দিয়ে অনেকটা ঘরোয়া প্রতিকার সম্ভব। এই ফলটির দ্বারা প্রাকৃতিক উপায়ে আপনি আপনার নিত্য সৌন্দর্যচর্চা করতে পারেন যা অন্য রাসায়নিক যুক্ত দ্রব্যে উপকৃত নাও হতে পারেন। কলা, আর্দ্রতা, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফটোকেমিক্যালস-সমৃদ্ধ তাই ত্বক, শরীর এবং চুলের পুষ্টি প্রদান করার জন্য এটি একটি দুর্দান্ত ঘরোয়া প্রতিকার। এটি একই সাথে আমাদের ফেস এবং চুলের জন্য সমান উপকারী।কলা কে চটকে ফেসে কিছুক্ষন মাখিয়ে রাখুন।তারপর হালকা হাতে একটু রাব করে ধুয়ে ফেলুন।
৫.ময়দা:
ময়দা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সব চেয়ে বেশি উপকারী একটি উপাদান।ময়দা তে থাকা একাধিক উপাদান ত্বক উজ্জ্বল করে। রোমকূপে জমে থাকা নোংরা বের করতে বেশ উপকারী এই প্যাক যা ত্বকের মৃত কোষ কে দুর করে নতুন কোষ কে ফুটিয়ে তোলে।ময়দা কে আপনি এমনই ইউজ করতে পারেন বা ময়দা তে একটু হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে তারপর ও ইউজ করতে পারেন।
ব্যাবহার বিধি:
উপরের যেকোনো দুটি বা তিন টি উপাদান একসাথে মিশিয়ে আপনি আপনার ফেস প্যাক নিজেই তৈরী করে নিতে পারেন।আপনার স্কিন এর সমস্যা অনুযায়ী যেকোনো ২ বা ৩ টি উপাদান দিয়েই ঘরে বসে তৈরি করে ফেলুন কার্যকরী ফেস প্যাক।এইখানের প্রতিটি উপাদানই একটি অপরটির চেয়ে অনেক বেশি উপকারী।তাই একটি সাথে যখন অন্য আরেকটি উপকারী উপাদান মিশিয়ে ফেস প্যাক তৈরি করা হয় তাই আপনার জন্য ফেস প্যাক টি অনেক উপকারী হবে।
ফেসওয়াশ:
আপনি উপরের যে পদ্ধতিটিই ইউজ করেন না কেনো ইউজ করার আগে অবশ্যই আপনার ফেস টা কে ভালো করে ফেসওয়াশ করে নিন।সব পদ্ধতির ভিত্তি পার্ট টা কিন্তু ক্লিনিং।আপনি যেকোনো মাইল্ড একটি ফেসওয়াশ দিয়ে আপনার ফেস টা কে ভালো করে পরিষ্কার করে নিন তারপর পদ্ধতি গুলো ইউজ করুন।
ঘরোয়া পদ্ধতি ইউজ এর সুবিধা:
একবার ব্যবহারেই ফলাফল বুঝতে পারবেন।তবে আরো ভালো ফলাফল পেতে সপ্তাহে ২ দিন ব্যাবহার করুন।উপরের সবগুলো পদ্ধতি একটি একটি ম্যাজিকাল face pack er পদ্ধতি।আপনার ত্বকের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে তো আনবেই একই সাথে ত্বক কে কোমল ও মসৃণ করে তুলবে।আপনার ত্বকে যে পুষ্টি পাবে সেইটা চিরকাল ধরে রাখতে পারবে আর এইটাই ত ঘরোয়া পদ্ধতির আসল সুবিধা।
ত্বকের যত্নে ফেস প্যাক:
ত্বকের যত্নে ফেস প্যাক একটি অতি আবশ্যক পদ্ধতি।কারণ ফেস প্যাক অনেক সময় ধরে আমাদের ফেসে লেগে থাকে তাই উপাদান গুলোর সব টুকু পুষ্টি আমাদের ত্বক খুব সহজেই পেতে পারে।তাই ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ফেস প্যাক ইউজ করার ব্যতিক্রম নেই।একমাত্র এইটাই আপনার ত্বক কে উজ্জল করে ফুটিয়ে তুলবে।