বর্তমান দিনে পিম্পল এর সমস্যা প্রায় সবার।নরমাল থেকে শুরু করে ওইলি,ড্রাই,সেনসিটিভ সব স্কিন টাইপ এই ব্রণ এর সমস্যা দেখা যায়।ব্রণ কিন্তু একটি বিরক্তিকর সমস্যা কারণ ব্রণ এর জন্যই আমাদের স্কিনে ব্ল্যাকহেড এর সমস্যা দেখা দেয়, রেডনেস এমনকি স্কিনে দাগ ও পড়তে পারে।ব্রণ সাধারণত আমাদের স্কিন পোরে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে।তবে আপনি যদি সঠিক পদ্ধতি ফোলো করেন তাহলে ব্রণ থেকে রক্ষা পাওয়া কিন্তু খুবই সোজা।
আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো খুব সহজে ঘরে বসেই ব্রণ এর হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার উপায়।তবে চলুন শুরু করা যাক।

ব্রণ হওয়ার সঠিক কারণ:
আমরা সাধারনত মনে করে থাকি ব্রণ বাইরের ধুলাবালি,ব্যাকটেরিয়া এবং বিভিন্ন ফাঙ্গাস এর কারণে হয়ে থাকে। হ্যাঁ অবশ্যই এই কারণ গুলোর জন্য ব্রণ হয়।তবে ব্রণ হওয়ার আরো কিছু কারণ রয়েছে।ব্রণ শরীরের হরমোনাল চেঞ্জ এর কারণে হতে পারে বা আপনার লাইফ স্টাইলের কারণেও হতে পারে।অনেকেরই ব্রণ একটি জেনেটিক্যাল সমস্যা বলেও জানা গেছে।সারাদিন পরিমাণ মত পানি পান না করলেও ব্রণ হতে পারে কারণ পানি আমাদের স্কিন কে হাইড্রেটেড রাখে।ব্রণ থেকে বাঁচতে অবশ্যই বেশি করে পানি পান করুন।
ব্রণ দূর করার উপায়:
ব্রণ দূর করতে বেশ কিছু হোম রেমেডি রয়েছে যেগুলো আপনি ঘরে বসেই ইউজ করতে পারবেন।সামান্য কিছু উপাদান দিয়েই রেমেডি গুলো তৈরি করা সম্ভব।তবে উপাদান গুলো ন্যাচারাল হলে আপনার ব্রণ সমস্যা অনেক তাড়াতাড়ি দূর করতে পারবেন।চলুন জেনে নেওয়া যাক উপাদান গুলো।
রেমেডি ১: হলুদ ও নিম পাতা।

প্রাকৃতিক উপায়ে ব্রণ থেকে রক্ষা পেতে হলুদ আর নিম পাতার মিশ্রণ কোনো জাদুর চেয়ে কম না। খাঁটি হলুদ এবং নিম পাতা দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে আপনার মুখে মাখুন।১০ মিনিট অপেক্ষা করুন তারপর ধুয়ে ফেলুন।নিম পাতা তে রয়েছে ফাঙ্গাস ও ব্যাকটেরিয়া নাশক গুণাগুণ যা স্কিন কে ভিতর থেকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।স্কিনের পোর থেকে সব ময়লা দূর করে এবং এর সাথে রয়েছে হলুদ যা অ্যান্টিসেপটিক হিসাবে কাজ করে।দুটো উপাদানই অসম্ভব কার্যকরী।
রেমেডি ২: হলুদ ও লেবু।

পরিমাণ মতো হলুদ বেতে রস বের করে নিন এর সাথে হাফ টেবিল চামচ লেবুর রস অ্যাড করুন।স্কিনে মাখিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে স্কিন টা ধুয়ে নিন।হলুদ প্রাচীন কাল থেকেই ত্বক চর্চায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে।আর একই সাথে লেবু তেও রয়েছে কার্যকরী উপাদান যা ব্রণ থেকে বাঁচতে সাহায্য করে।
রেমেডি ৩: বেসন ও গোলাপ জল।

এক টেবিল চামচ পরিমাণ বেসন নিন এবং গোলাপ জল মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন।এরপর মিশ্রণ টি স্কিন এ মাখুন এবং ১৫ মিনিট এর জন্য রাখুন।তারপর নরমাল পানি দিয়ে স্কিন টি পরিষ্কার করে নিন।এটি আপনার স্কিন এর পোর এর ভিতর জমে থাকা ময়লা বের করে এনে এবং ব্রণ বার বার ফিরে আসা রোধ করে।
রেমেডি ৪: মধু এবং লেবু।

প্রাকৃতিক ভাবেই বহু কাল থেকে স্কিনের বিভিন্ন সমস্যা দুর করতে মধু ও লেবু ইউজ করা হচ্ছে এক টেবিল চামচ মধু ও সমপরিমাণ লেবু দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন।আপনার স্কিন এর ব্রণ হওয়া জায়গা তেই কেবল মিশ্রণ টি মাখুন।১০ মিনিট অপেক্ষার পর গরম পানি দিয়ে স্কিন টি ধুয়ে নিন।ভালো ফলাফল পেতে সপ্তাহে ২ দিন এই রেমেডি টি ইউজ করুন।
রেমেডি ৫: একটি সুতি কাপড় ও গরম পানি।

সুতি কাপড় টি কিছুখন গরম পানি তে ভিজিয়ে রাখুন তারপর কাপড় টি আপনার ফেইসের উপর রেখে দিন।অথবা আপনি গরম পানির ভাব সরাসরি একবার স্কিন এ নিতে পারেন।দুটোই খুব কার্যকরী হবে ব্রণ দুর করতে। ১ মিনিট পর পর 5 মিনিট এইভাবে গরম পানির ভাব নিন।
ব্রণ দূর করতে হোম রেমেডি এর পাশাপাশি আপনার খাবারের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।আপনার খাদ্য তালিকায় বেশি করে শাক সবজি অ্যাডকরুন এবং প্রচুর পানি পান করুন।
ব্রণ থেকে বাঁচার উপায়:
ব্রণ এর হাত থেকে বাঁচতে হলে আপনাকে একটি সঠিক স্কিন কেয়ার রুটিন ফলো করতে হবে।আপনার স্কিনে যদি বার বার ব্রণ ফিরে আসে তাহলে কিভাবে স্কিন কেয়ার করবেন সেইটা ভাবছেন তো?আর ভাবনা নয়।ব্রণ থেকে বাঁচতে সঠিক স্কিন কেয়ার ফলো করুন।
স্কিন কে পরিষ্কার করা:
আপনার স্কিন কে অবশ্যই গরম পানি এবং একটি মাইল্ড ফেসওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করুন।গরম পানি স্কিন এর পোর গুলো কে খুলে দেই তাই স্কিন টি খুব ভালো করে পরিষ্কার হয়।একই সাথে ব্রণ ফিরিয়ে আনা জীবাণু গুলো দূর করে।
স্কিন টোনার:
স্কিন পরিষ্কার করার পর টোনার ইউজ করুন এটি স্কিনের সব জেদী ময়লা এবং ওয়েল দূর করতে সাহায্য করে।আপনি চাইলে গোলাপ জল কে টোনার হিসেবে ইউজ করতে পারেন।

ট্রিটমেন্ট ক্রিম:
আপনার স্কিন কে ব্রণ থেকে রক্ষা করতে অবশ্যই একটি নন-কমেডোজেনিক ময়চারাইজার ইউজ করুন এবং সালিসাইলিক অ্যাসিড ট্রিটমেন্ট ইউজ করুন।এটি আপনার স্কিন কে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে এবং ব্যাকটেরিয়ার দূর করতে সাহায্য করে।
আপনার স্কিন থেকে ব্রণ চিরতরে দূর করতে হলে অবশ্যই একটা কথা মাথায় রাখবেন ভুলেও ব্রণ ফাটাবার চেষ্টা করবেন না।আমাদের নখে অঙ্ক জীবাণু থাকে আর সেই নখ দিয়ে ব্রণ ফাটালে ব্রণ এর সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।